1. abdullahharun2014@gmail.com : dailysarabela24 :
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন
নোটিশ :
দৈনিক সারাবেলা ২৪ , সত্য সংবাদ প্রকাশে আপোষহীন visit . www.dailysarabela24.com অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল সংবাদ পড়ুন ও মন্তব্য করুন, আপনার প্রতিষ্ঠানের এড দিন , সংবাদ প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করুন - ০১৯৭১-৮৪১৬৪২,০১৩২২-১৭৫০৫২
সংবাদ শিরোনাম:
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নারী-শিশুসহ ৩৫ জনকে পতেঙ্গা সী-বিচ এলাকা হতে আটক করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম আ.লীগ নিষিদ্ধসহ হেফাজতের ১২ দফা মাসে ৬ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ, অসহায় বিজিবি নির্বাচনের আগে অবশ্যই আওয়ামী লীগ এর নিবন্ধন বাতিল করতে হবে ‘জাতিসংঘ মহাসচিবকে এনে রোহিঙ্গা পাঠানোর কথা বলে জনগণের আইওয়াশ করা হলো’ পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে দুই মাসের জন্য খাদ্য মজুদের নির্দেশনা জারি নারীবিষয়ক কমিশন বাতিলসহ সব দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি হেফাজতের ফিজিতে ২৬ বাংলাদেশি শ্রমিকের কষ্টের কথা শুনলেন প্রধানমন্ত্রী, নিলেন ব্যবস্থা কাশ্মীর সীমান্তে টানা অষ্টম রাত ভারত–পাকিস্তান গোলাগুলি, উত্তেজনা বাড়ছে পর্নোগ্রাফি প্রচারের অভিযোগে দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে ভাটারা থানা পুলিশ

মাসে ৬ হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ, অসহায় বিজিবি

  • আপডেটের সময় : শনিবার, ৩ মে, ২০২৫
  • ২ বার ভিউ

বিশেষ প্রতিবেদন :

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যুদ্ধ যতই তীব্র হচ্ছে, ততই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ বেড়ে চলেছে। সংঘর্ষের মধ্যে দুই পক্ষের হামলার মূল লক্ষ্য হয়ে উঠছে সাধারণ রোহিঙ্গা জনগণ। আর এ কারণে অনেকেই জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতিমাসে সাড়ে ৬ হাজারের মতো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং মানবিক করিডর দিতে জাতিসংঘের আহ্বানকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সবমিলিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফের বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চাপ ও চক্রান্তের শিকার হতে পারে। এতে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি-এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত দেড় বছরে বাংলাদেশে নতুন করে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১ লাখ ১৫ হাজার ব্যক্তির বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এর বাইরেও কমপক্ষে আরও ৫ থেকে ১০ হাজার রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত অবস্থায় বিভিন্ন দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। সে হিসাবে প্রায় প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন অর্থাৎ প্রতিমাসে সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে।

জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, নতুন করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং ‘খাদ্য সহায়তা’র নামে মানবিক করিডর চালু করার প্রস্তাবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও বিপর্যয়ের দিকে যেতে পারে। তিনি বলেন, এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে এটি কেবল মানবিক ইস্যু থাকবে না, বরং বাংলাদেশের কৌশলগত নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠবে। তার মতে, সীমান্তে শৃঙ্খলা, জাতীয় নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা-সবকিছুই চাপে পড়বে যদি নতুন করে করিডরের নামে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সুযোগ তৈরি হয়।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, জাতিসংঘের প্রস্তাবের পূর্ণাঙ্গ খসড়া, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কৌশল জনসমক্ষে প্রকাশ করা উচিত। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যুতে অন্ধকারে থাকার সুযোগ নেই। কারণ, এতদিন পর এসে কেন তারা হঠাৎ খাদ্য সহায়তার নামে মানবিক করিডরের কথা বলছে।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শুক্রবার দুপুরে যুগান্তরকে বলেন, দেখা গেছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যুদ্ধের তীব্রতা বাড়লেই বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশও বাড়ে।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে নতুন করে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১ লাখ ১৫ হাজার ব্যক্তির বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। আরও রোহিঙ্গা থাকতে পারে, তবে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন না হওয়া পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের তথ্য বলছে, আরও ৫ থেকে ১০ হাজার রোহিঙ্গা বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন।

কমিশনার মিজানুর রহমান আরও জানান, ২০২৪ সালের মে, জুন ও জুলাই-এই তিন মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ওই সময়ে মংডু এলাকায় জান্তা বাহিনীর হামলা বৃদ্ধি পায় এবং সীমান্তে বিজিবির নজরদারি কমে গিয়েছিল।

তার দেওয়া তথ্যমতে, গত বছরের আগস্টেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। সবমিলিয়ে আগের ১০ লাখ ৩৬ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সঙ্গে নতুন ১ লাখ ১৫ হাজার যোগ হয়ে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৫১ হাজারে। এদের বেশির ভাগই কক্সবাজারের ২৭টি ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লকে পুরোনো রোহিঙ্গা বা তাদের আত্মীয়স্বজনদের আশ্রয়ে অবস্থান করছেন।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের তথ্যমতে, একদিকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২২০ জন এবং প্রতিমাসে সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। অন্যদিকে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্মের হারও বেড়ে চলছে। প্রতিদিন ৯০ এবং প্রতিবছর ৩০ হাজার করে রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হচ্ছে বাংলাদেশে। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের ওপর দিনদিন চাপ বেড়ে চলছে। কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিবছর ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম বাংলাদেশের ওপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা কোনোভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না।

দেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৫২ শতাংশ শিশু, ৪৪ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৪ শতাংশ বয়স্ক রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৪ লাখ ৯২ হাজার ৭০৫ জন পুরুষ (৪৯ শতাংশ) এবং ৫ লাখ ১২ হাজার ৮১৫ জন নারী (৫১ শতাংশ) রয়েছে।

মানবিক করিডর দেওয়া হলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে বলে জানান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনিরুজ্জামান। তিনি যুগান্তরকে বলেন, মানবিক করিডর জাতীয় স্বার্থের সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া করিডর দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। এটা দেওয়া হলে দেশে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, রাখাইন একটি স্পর্শকাতর এলাকা। সেখানকার অভ্যন্তরীণ অনেক গ্রুপ রয়েছে। পাশাপাশি চীন, ভারত, রাশিয়া ও আমেরিকার মতো পরাশক্তি দেশগুলোর স্বার্থ রয়েছে। করিডর দেওয়া হলে এসব শক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক তৈরি হতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি ছাড়া করিডর দেওয়া দেশের জন্য আত্মঘাতী হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, করিডর দেওয়া খুবই বড় সিদ্ধান্ত। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে সংসদে পাশ হওয়ার প্রয়োজন হয়। বর্তমানে সংসদ নেই। অন্তর্বর্তী সরকারও অস্থায়ী। এমন অবস্থায় রাজনৈতিক বড় দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে মাথায় রাখতে হবে, করিডর দেওয়া হলে দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। এজন্য বাংলাদেশকে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুতি রাখতে হবে।

সীমান্তে অসহায় বিজিবির নানা সীমাবদ্ধতা : রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে সীমান্ত পরিস্থিতির বাস্তবতা ও মানবিক চ্যালেঞ্জের চিত্র তুলে ধরেছেন কক্সবাজার রিজিয়নের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমএম ইমরুল হাসান। যুগান্তরকে তিনি বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাত ও দমনপীড়নের কারণে জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা রাতের অন্ধকারে স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। বিজিবির সদস্যরা কেওড়াবাগানের ভেতর দিয়ে কোমরসমান পানি ও কাদামাটি মাড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একদিকে ছুটে গেলে অন্যদিক দিয়ে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করছে।

তিনি জানান, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গিয়ে অনেক সময় বিজিবির সদস্যরা দুষ্কৃতকারীদের হামলায় আহত হচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষকে তো গুলি করে মারা সম্ভব নয়। কারণ দিনশেষে বিজিবির সদস্যরাও মানুষ। মানবাধিকার বলে একটি বিষয় রয়েছে, যা আমরা শ্রদ্ধা করি।

সীমান্ত নজরদারিতে ও সীমাবদ্ধতা কথা উল্লেখ করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল হাসান বলেন, সীমান্তে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই, নেই মনিটরিংয়ের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি বা ক্যামেরা। কাঁটাতারের কোনো সুরক্ষাবেষ্টনীও নেই। এসব ঘাটতি পূরণে ইতোমধ্যে বিজিবির পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আরও দুটি ব্যাটালিয়ন বৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বিজিবি একা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারবে না। স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিয়ে প্রতিরোধে সহায়তা করতে হবে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল হাসান আরও বলেন, রোহিঙ্গারা যদি যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করেও আশ্রয় বা ভরসা না পেত, তাহলে এত সহজে তারা সীমান্ত পেরোনোর সাহস করত না।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ©2024 ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ThemeNeed.com