বিশেষ প্রতিবেদন :
“১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে আমরা প্রধান উপদেষ্টা সাথে সাক্ষাৎকালে তার হাতে দেয়া পত্রে “গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার” দাবী জানিয়েছিলাম।
১৬ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার সাথে সর্বশেষ সাক্ষাৎকালেও তার হাতে দেয়া পত্রে আমরা “পতিত ফ্যাসীবাদী দল ও সেই দলীয় সরকারের সাথে যারাই যুক্ত ছিল তাদের বিচার দ্রুত করে দেশের রাজনীতির ময়দানকে জঞ্জালমুক্ত করার” দাবী জানিয়েছি। আলোচনায় আমরা স্পষ্ট করে বলেছিলাম যে, আইনী প্রক্রিয়াতেই ফ্যাসীবাদী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব ও উচিত। বিভিন্ন সভা, সমাবেশে ও আলোচনায় আমরা আমাদের এসব দাবী বার বার উত্থাপন করেছি। উল্লেখযোগ্য যে, আমরা প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে বলেই বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের আগ মূহুর্তে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছিলো বিএনপি।
আমরা আনন্দিত যে, বিলম্বে হলেও গতরাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসীবাদী সরকারের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দ্রুত করার এবং বিচারকার্য নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে ফ্যাসীবাদী দল আওয়ামী লীগ ও তার সাথে যুক্ত সকল সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাসঙ্গিক আইন সংশোধন করে বিচারিক প্রক্রিয়ায় গুম, খুন, নিপীড়ন ও জনগণের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন অপশাসন চালনাকারী, ফ্যাসীবাদী দলের বিচার করার সিদ্ধান্তকে আমরা সঠিক বলে মনে করি। তবে আমাদের দাবী মেনে আগেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলে চাপের মুখে ব্যবস্থা নেয়ার মত বিব্রতকর ও অনভিপ্রেত অবস্থায় সরকারকে পড়তে হতো না। ভবিষ্যৎ কার্যক্রম পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি সতর্কতার সাথে মনে রাখবেন বলে আমরা আশা করি।
দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণ তাদের ভোটাধিকার তথা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ফ্যাসীবাদের পতনের জন্য গুম, খুন, জেল, জুলুম সহ্য করেও অব্যহত লড়াই করেছে। তাদের সেই দাবী এখনও অর্জিত হয়নি। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষনার দাবীও ক্রমাগত উপেক্ষিত হওয়ায় জনমনে যে ক্ষোভোর সৃষ্টি হচ্ছে সে ব্যাপারে সচেতন হওয়ার জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
—
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মহাসচিব, বিএনপি
মে ১১, ২০২৫, এক বিবৃতিতে।
Leave a Reply