বিশেষ প্রতিবেদন :
জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার জরুরি বৈঠক সোমবার
ইরান পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তদন্ত দাবি করে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক এ সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলাম।
হামলার নিন্দা জানাতে আইএইএ’র প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে তেহরান।
এর আগে আইএইএ জানায়, ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর রেডিয়েশন বা তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ বাড়েনি।
ইসরায়েলের ১০ এলাকায় আঘাত ইরানের
ইরানের প্রধান তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর ইসরায়েলে প্রায় ২০টি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এসব ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিব, হাইফাসহ ইসরায়েলের অন্তত ১০টি এলাকায় আঘাত হেনেছে, যাতে আহত হয়েছে ১৬ জন।
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, রোববার সকালে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল লক্ষ্য করে ইরান থেকে ছোড়া প্রায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে তারা।
বন্দরনগরী হাইফাসহ ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে প্রাথমিক প্রতিবেদনগুলোতে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বহু ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগে সেখানে কোনো সতর্কতামূলক সাইরেন বাজেনি বলে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে।
ইসরায়েলের দমকল বাহিনী জানিয়েছে, উপকূলীয় এলাকা, মধ্যাঞ্চল ও তেল আবিব মেট্রোপলিটন এলাকাগুলো থেকে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার খবর এসেছে। এসব এলাকার ভবন ও গাড়িগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে আর তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দমকল বাহিনীর টিমগুলো ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছে।
বিপ্লবী বাহিনীর নিশানায় ইসরায়েলি বিমানবন্দর
ইসরায়েলের বেন গুইয়ন বিমানবন্দরকে নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী।
বার্তা সংস্থা তাসনিম লিখেছে, বেশ কিছু গবেষণাকেন্দ্র, সহায়তা ঘাঁটি এবং বিভিন্ন স্তরের নিয়ন্ত্রণ ও কমান্ড সেন্টারকেও নিশানা করা হয়েছে।
বিপ্লবী গার্ড বাহিনী জানিয়েছে, এই হামলায় তরল ও কঠিন জ্বালানি চালিত উভয় ধরনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
পশ্চিম ইরানে নতুন হামলা ইসরায়েলের
পশ্চিম ইরানের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী।
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে ঘণ্টা খানেক আগে সতর্কতা জারি করে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এর পরপরই ইরানে আক্রমণের কথা জানাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ইরানের ভূখণ্ডে মিসাইল লঞ্চার নিশানা করে হামলা চালানোর কথা বলছে আইডিএফ।
কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানো: তেহরান এ কৌশল নিলে আরও মার্কিন হামলা থেকে রক্ষা পেতে পারে। কূটনৈতিক পথ বেছে নিয়ে ফের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার সুযোগ রয়েছে।
তবে কোনো জবাব না দিলে ইরানকে দুর্বল দেখাতে পারে- কারণ যুক্তরাষ্ট্র যদি হামলা চালায়, তার ভয়াবহ প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি বরাবরই দিয়ে এসেছে তেহরান। দেশটির শাসকগোষ্ঠী জনগণের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকিকে আরো মার্কিন হামলার চেয়েও গুরুতর হিসেবে দেখতে পারে।
দ্রুত ও কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া: ইরানের কাছে এখনও বিপুল সংখ্যক দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ রয়েছে, যা তারা বছরের পর বছর ধরে তৈরি ও গোপন করে রেখেছে। তাদের নিশানা তালিকায় মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় ২০টি মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে। তারা ড্রোন ও দ্রুতগতির টর্পেডো নৌকা ব্যবহার করে মার্কিন নৌবাহিনীর রণতরী লক্ষ্য করে যুগপৎ হামলা চালাতে পারে।
সুবিধামতো সময়ে প্রতিশোধ: বর্তমান উত্তেজনা কমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে পারে তেহরান। যখন মার্কিন ঘাঁটিগুলো সর্বোচ্চ সতর্কতা থেকে সরে আসবে, তখন অপ্রত্যাশিত হামলা চালানোর সুযোগ মিলতে পারে এই কৌশলে।
ইরানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব বিকল্প খোলা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কিন হামলাকে ‘নির্লজ্জ’ বর্ণনা করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, ইরান তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব বিকল্প খোলা রাখছে।
তিনি এক্স পোস্টে বলেছেন, “আজকের সকালের ঘটনা চরমভাবে নিন্দনীয় এবং এর দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি থাকবে। জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রেরই অত্যন্ত বিপজ্জনক, আইনবহির্ভূত ও অপরাধমূলক এই আচরণ নিয়ে সোচ্চার হওয়া উচিত।”
আরাগচি বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হয়েও যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে।
ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা
যুক্তরাষ্ট্রের হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা।
এই কেন্দ্রটি পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত, যেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল ইরান। ভূগর্ভে অবস্থানের কারণে এই স্থাপনা অত্যন্ত সুরক্ষিত বলে ধরা হত এতদিন।
এ ধরনের স্থাপনা ধ্বংস করতে পারে কেবল ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা, যা কেবল যুক্তরাষ্ট্রেরই আছে।
এসব বোমার ওজন প্রায় ৩০ হাজার পাউন্ড। বিশেষভাবে নকশা করা এসব বোমা কংক্রিট বা পাথরের গভীর স্তর ভেদ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
বিবিসি লিখেছে, ফোরদোর মত জটিল ও সুরক্ষিত স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা কতটা ক্ষতি করতে পেরেছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন আক্রমণ যুদ্ধের বিস্তার আরো প্রসারিত হওয়ার শঙ্কা বাড়িয়েছে।
কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া হামলার নিন্দা ডেমোক্র্যাটদের
কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই ইরানে হামলা চালানোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা।
একে সংবিধান ও কংগ্রেসের যুদ্ধ ক্ষমতার ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়ে কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কোর্টেজ বলেন, এটি স্পষ্টতই অভিশংসনের (ইমপিচমেন্ট) জন্য পর্যাপ্ত কারণ।
তিনি এক্স পোস্টে লিখেছেন, “ট্রাম্প আবেগপ্রবণভাবে এমন যুদ্ধের সূচনা করেছেন, যা আমাদের বহু প্রজন্মকে জড়িয়ে ফেলতে পারে।”
একইভাবে মার্কিন হামলাকে ‘সংবিধানের স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে নিন্দা জানিয়ে কংগ্রেসওম্যান রাশিদা তলেইব কংগ্রেসকে তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
“আমরা দেখেছি, মধ্যপ্রাচ্যে দশকের পর দশক ধরে চলা অন্তহীন যুদ্ধ আমাদের কোথায় নিয়ে গেছে – সবই ‘বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার’ মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে। আমরা আর সেই ফাঁদে পা দেব না।”
অন্যদিকে কংগ্রেসম্যান জিম ম্যাকগভার্ন চলমান পরিস্থিতিকে ‘অবিশ্বাস্য’ বলে বর্ণনা করেছেন।
“ট্রাম্প কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই ইরানে বোমাবর্ষণ করে আমাদেরকে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে অবৈধভাবে জড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা কি কোনো শিক্ষাই নিইনি?”
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সংক্ষিপ্ত ভাষণে তেহরানকে এবার ‘শান্তির পথে’ আসার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে হুমকি দিয়েছেন, ইরান পাল্টা জবাব দিলে আরও প্রবল হামলা চালানো হবে।
আল জাজিরা লিখেছে, এত বড় আঘাত হজম করা ইরানের পক্ষে সহজ হবে না। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো হামলার জবাবে ‘ভয়াবহ প্রতিশোধের’ হুমকি দিয়ে আসা ইরান সরকারের গ্রহণযোগ্যতাও এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিক্রিয়া নাও জানায়, ইসরায়েলে যে তারা ফের হামলা চালাবে না, সেই নিশ্চয়তা নেই। আবার যুক্তরাষ্ট্রও যে ইরানের নতুন কোনো স্থাপনায় হামলা করবে না, সেটাও বলা যাবে না।
ইরান তাদের শক্তি অনুযায়ী সীমিত পরিসরে জবাব দেওয়ার পথ বেছে নিতে পারে, যেমনটি তারা করেছিল মার্কিন হামলায় কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর। সেবার ইরাকে ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান।
তবে এ ধরনের পদক্ষেপে সংঘাত আরও বাড়ার ঝুঁকি থেকে যায়, বিশেষ করে ট্রাম্প যখন সরাসরি ইরানের ভেতরে হামলা চালিয়ে এ সংঘাতের নতুন পর্ব শুরু করে দিয়েছেন।
নেতানিয়াহুর ‘অভিনন্দন’, ট্রাম্পের ‘ধন্যবাদ’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় ইরানে হামলার সিদ্ধান্তের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন
তিনি বলেছেন, “অভিনন্দন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায়সঙ্গত ও অসাধারণ শক্তি দিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে নিশানা করার যে সাহসী সিদ্ধান্ত আপনি নিয়েছেন, তা ইতিহাস বদলে দেবে।”
নেতানিয়াহু বলেন, “অপারেশন রাইজিং লায়নে ইসরায়েল সত্যিই অসাধারণ কিছু করেছে। কিন্তু আজ রাতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র যা করেছে, তা অতুলনীয়। এমন কিছু করেছে, যা পৃথিবীর আর কোনো দেশ করতে পারত না। ইতিহাসে লেখা থাকবে, বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শাসনব্যবস্থাকে সবচেয়ে বিপজ্জনক অস্ত্র থেকে বঞ্চিত করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।”
অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে তিনি একজোট হয়ে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাতে চাই। আমরা একটি দল হিসেবে কাজ করেছি। এমনভাবে আমরা কাজটা করেছি, যা সম্ভবত অতীতে কেউ কখনও করেনি। আমরা ইসরায়েলের জন্য এই ভয়াবহ হুমকি দূর করতে অনেক দূর এগিয়েছি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে তাদের অসাধারণ কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
ফোরদোতে ‘গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হয়নি’, দাবি ইরানি এমপির
ইরানের কোম এলাকার এমপি মানান রাইসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ফোরদোর ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক কেন্দ্রে যে হামলা চালিয়েছে, তা কেবল উপরিভাগের ক্ষতি করেছে, গভীরে পৌঁছাতে পারেনি।
রাইসিকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা তাসনিম লিখেছে, “মিথ্যাবাদী মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবির বিপরীতে আমি সঠিক তথ্য দিচ্ছি। ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষতি হয়েছে কেবল উপরের দিকে, যা মেরামত করা সম্ভব।”
তিনি বলেন, মার্কিন হামলার পর তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কোনো প্রমাণ পারমাণবিক কেন্দ্রের আশপাশে মেলেনি।
তেজস্ক্রিয় দূষণ ঘটেনি, বলছে ইরানের পরমাণু সংস্থা
মার্কিন হামলার পর ইরানের ফোরদো, ইস্পাহান ও নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনার আশপাশে বিকিরণ পর্যবেক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ের জরিপে কোনো তেজস্ক্রিয় দূষণ বা বাসিন্দাদের জন্য ঝুঁকির প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছে দেশটির পারমাণবিক শক্তি সংস্থা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে সংস্থাটি বলেছে, “ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে অবৈধ মার্কিন হামলার পর মাঠ পর্যায়ের জরিপ ও বিকিরণ পর্যবেক্ষণ উপাত্তে কোনো ধরনের দূষণের রেকর্ড পাওয়া যায়নি।”
“এসব স্থাপনার আশপাশের বাসিন্দাদের জন্য কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই। পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।”
সৌদি আরবের পারমাণবিক ও বিকিরণ নিয়ন্ত্রক কমিশনও বলেছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলার পর প্রতিবেশী উপসাগরীয় দেশগুলোতে কোনো তেজস্ক্রিয়া শনাক্ত হয়নি।
এর আগে ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম স্বীকার করেছিল, যুক্তরাষ্ট্র ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
এবার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ইরনা নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে হামলার খবর নিশ্চিত করেছে।
ইস্পাহানের গভর্নরের উপদেষ্টা আকবর সালেহিকে উদ্ধৃত করে ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আমরা ইস্পাহান ও নাতাঞ্জের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর আশপাশে হামলার দৃশ্য দেখেছি।”
সালেহি বলেন, ইস্পাহান ও নাতাঞ্জে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এ হামলা যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’: হামাস
ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ বলে বর্ণনা করেছে হামাস।
এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি বলেছে, এই হামলা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি হুমকি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাস, যাতে ১২০০ জনের প্রাণহানি ঘটে। তার পাল্টায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে নারী-শিশুসহ অর্ধ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি মারা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা হামলা চালালে ইরানের পরিণতি দ্বিগুণ খারাপ হবে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউজে বক্তৃতার পর ট্রুথ সোশাল পোস্টে তিনি লিখেছেন, “ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধ নেয়, তাহলে আজ রাতের হামলার চেয়েও অনেক বেশি শক্তি প্রয়োগ করে জবাব দেওয়া হবে।”
ইরানে মার্কিন হামলাকে ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা’ বর্ণনা করে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “এই সংঘাতের দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে গেছে- যার ফল সাধারণ জনগণ, এই অঞ্চল এবং পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক হতে পারে।”
তিনি এক্স পোস্টে বলেন, “এই সংকটময় মুহূর্তে বিশৃঙ্খলার চক্র এড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামরিক সমাধান নেই। একমাত্র পথ কূটনীতি। একমাত্র আশা শান্তি।”
মার্কিন হামলার নিন্দা ইরানের আণবিক সংস্থার
তেহরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘বর্বর হামলার’ নিন্দা জানিয়েছে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা।
সংস্থাটি অভিযোগ করেছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা ‘নির্বিকার এবং এমনকি সহযোগী মনোভাব’ গ্রহণ করেছে।
ইরানের ওপর হামলার ‘নিন্দা জানাতে’ এবং ইরানের ‘ন্যায়সঙ্গত অবস্থানকে’ সমর্থন দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা।
এই সংস্থাটি বলেছে, “শত্রুদের কূটচালের মধ্যেই ইরানের বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা ‘দেশের পারমাণবিক শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন’।”
ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা এও বলেছে, হামলার ঘটনায় তারা ‘প্রয়োজনীয়’ পদক্ষেপ নেবে, যার মধ্যে ‘আইনি ব্যবস্থা’ও থাকবে।
ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র ‘এক দল হয়ে কাজ করছে’
ট্রাম্প বলেন, ইরানের সাবেক সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানির হাতে হাজারো মানুষ প্রাণ হারান।
“আমি বহু আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে- এটা আর হতে দেব না, এটা আর চলবে না।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অভিনন্দন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলের জন্য ‘ভয়াবহ হুমকি’ মোকাবেলায় তারা ‘একটি দল’ হিসেবে কাজ করছেন।
Leave a Reply