বিশেষ প্রতিবেদন :
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই তথাকথিত ‘বিদেশি’ ঘোষিত ব্যক্তিদের বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। শুক্রবার (৩০ মে) এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, রাজ্যের বিদেশি ট্রাইব্যুনালে (এফটি) ‘বিদেশি’ হিসেবে ঘোষিত ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারির একটি সুপ্রিম কোর্টের আদেশ। ওই আদেশে আদালত আসাম রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করে বলে, মাটিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পে আটক ঘোষিত বিদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলা আছে এবং আদালত আমাদের নির্দেশ দিয়েছে যে, যারা বিদেশি ঘোষিত হয়েছে, তাদের যেকোনো উপায়ে তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে কোনো আপিল নেই, আমরা তাদের পুশ ইন করছি। তবে কেউ যদি জানান যে, তাঁদের কোনো মামলা হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে, তাদের বিরক্ত করা হচ্ছে না।’
গত ২৩ মে থেকে আসাম রাজ্যে ‘বিদেশি’ ঘোষিত ব্যক্তিদের ধরপাকড় চলছে। অনেক পরিবার তাঁদের স্বজনদের অবস্থান জানেন না এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই ছাড়াই বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।
যদিও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে ‘পুশ ব্যাক’ বলছে, বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ‘পুশ ইন’-এর মতো অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, যা আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত। কারণ, সাধারণত নির্বাসন বলতে বোঝায়, পারস্পরিক যাচাই-বাছাই শেষে অন্য দেশের নাগরিকদের কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত পাঠানো। কিন্তু এখানে এমন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় ওকা ও উজ্জ্বল ভূঁইয়ার বেঞ্চ গত ৪ ফেব্রুয়ারির আদেশে মাটিয়া ক্যাম্পে থাকা ‘অবৈধ বিদেশি’ বন্দীদের অবস্থান জানতে চান। জবাবে আসাম সরকার জানায়, ক্যাম্পে থাকা ৬৩ জন ঘোষিত বিদেশির বিষয়ে নির্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি, কারণ তাদের নির্দিষ্ট ঠিকানা জানা নেই।
Leave a Reply